সূচকের গল্প

সপ্তম শ্রেণি (দাখিল) - গণিত - NCTB BOOK

সূচকের গল্প

গুণের গণনার খেলা চলো আমরা একটি গল্প পড়ি।

অনেক অনেক বছর আগে কোন অঞ্চলে একজন রাজা ছিলেন। একদিন রাজার দরবারে এক বিদেশি পর্যটক এলেন, সাথে নিয়ে এলেন ভীষণ সুন্দর এক চিত্রকর্ম। রাজা খুশি হয়ে পর্যটককে সেই চিত্রকর্মের মূল্য দিতে চাইলেন। কিন্তু পর্যটক সরাসরি কোন মূল্য না চেয়ে বললেন, "এই চিত্রকর্মের মূল্য দেওয়ার নিয়ম একটু ভিন্ন।" রাজা জিজ্ঞেস করলেন, "বলো দেখি কি নিয়ম!" পর্যটক বললেন, টানা ৫০ দিন ধরে এর মূল্য নিবেন। প্রথম দিন তিনি ১ টাকা নিবেন। দ্বিতীয় দিন তার দ্বিগুণ, অর্থাৎ ২ টাকা। তার পরের দিন নিবেন দ্বিতীয় দিনের দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৪ টাকা। এভাবে তিনি ৫০ দিন ধরে ঐ চিত্রকর্মের মূল্য নিবেন। হিসাবটি অনেকটা নিচের ছকের মত।

ছক ০.১

দিন

গুণের কাজ

টাকার পরিমাণ

 

× ২

×

8

8

৪ × ২

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . 

রাজা ভাবলেন, এ আর এমন কি, তিনি রাজি হয়ে গেলেন। এভাবে প্রত্যেকদিন পর্যটক এসে রাজ দরবার থেকে মূল্য নিয়ে যান। কিন্তু ২০ দিন যাওয়ার পর রাজার টনক নড়ে বসলো। ভাবো তো কি কারণে সেটি হল? তোমরা ছক ০.১ এর ন্যায় একটি ছক খাতায় তৈরি করে ৫ম দিন হতে ২০তম দিন পর্যন্ত টাকার পরিমাণটি নির্ণয় করো।

কিন্তু পর্যটক কী পদ্ধতিতে হিসাবটি দাঁড় করিয়েছে, তা কি ধরতে পারছো? হিসাবটি বুঝার জন্য হাতে কলমে আরও একটি কাজ করে দেখি, চলো। 

কাগজ ভাঁজের খেলা

কাগজ ভাঁজের খেলাটি খেলার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করো:

১. A4 বা বড় খাতার মাপের একটি কাগজ নাও।

২. কাগজটির চারপাশে এমনভাবে কলম দিয়ে দাগ টানো যেন কাগজটিকে একটি আয়তক্ষেত্র মনে হয়।

৩. এখন কাগজটিকে সমান ২ ভাগে ভাঁজ করো কোনো ভাঁজ নেই এবং ভাঁজ বরারবর কলম দিয়ে দাগ টানো। ফলে দুইটি ঘর পাওয়া গেল।

৪. আগের ভাঁজটি ঠিক রেখেই আবার কাগজটিকে ২ ভাগে ভাঁজ করো এবং আগের মত করেই দাগ দাও। এবার কয়টি সমান ঘর পাওয়া গেলো?

৫. অনুরূপ ভাবে আগের ভাঁজটি ঠিক রেখে আরও ৩ বার ভাঁজ করো এবং দাগ দাও।

একই ভাবে ভাঁজ করতে থাকলে কত তম ভাঁজে কয়টি ঘর পাওয়া যাবে নিচের ছকে (১.১) পূরণ করার চেষ্টা করো। পরবর্তীতে, দুইটি সমান ভাঁজের জায়গায় প্রতিবারে ৩ টি করে ভাঁজ করো এবং মোট ৪ বার ভাঁজ করে ছক ১.১ এর ন্যায় ছক ১.২ পূরণ করো।

ছক ১.১

কত তম ভাঁজ?

ঘর সংখ্যা

১ম

২য়

 

৩য়

 

৪র্থ

 

৫ম

 

ছক ১.২

কত তম ভাঁজ?

ঘর সংখ্যা

১ম

২য়

 

৩য়

 

৪র্থ

 

 

 

এবার চলো আমরা শ্রেণিকক্ষে বসেই একটি কাজ করি। তোমাদের যাদের রোল জোড় সংখ্যা তারা ৬ সংখ্যাটি নিচের ছকে লিখো এবং যাদের রোল বিজোড় তারা ৫ সংখ্যাটি নিজের ছকে লিখো।

ছক ১.৩

সংখ্যাকতটি সংখ্যা রয়েছে?
 

এখন, তুমি যে সংখ্যাটি নিলে, সেই সংখ্যাটিকে, সেই সংখ্যাটি দিয়ে ১ বার গুণ করো এবং তা নিচের ছকের ন্যায় পূরণ করো। ভেবে দেখো কি হতে পারে? তোমার রোল যদি বিজোড় হয় তাহলে দুটি ৫ গুণাকারে থাকবে। অর্থাৎ, গুণাকার হবে ৫০৫। তোমার রোল যদি জোড় হয় তাহলে দুটি ৬ গুণাকারে থাকবে। অর্থাৎ, গুণাকার হবে ৬০৬/

ছক ১.৪

গুণাকার

গুণফল

গুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?

×

 

 

এখন আগের বারের মতই, সেই সংখ্যাটি দিয়ে ২ বার গুণ করো এবং নিচের ছকে গুণাকারে লেখো। গুণফল কত পেলে?

ছক ১.৫

গুণাকার

গুণফল

গুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?

××

 

 

এমন করে ৩ বার, ৪ বার ও ৫ বার গুণ করো এবং নিচের ছকে লেখো। সুবিধার জন্য আংশিক পূরণ করে দেয়া হয়েছে ছকটি 

ছক ১.৬

গুণাকার

গুণফল

গুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?

×××

 

 

 

 

 

 

 

 

ছকটি পূরণ করা হলে তোমরা আরেকটি কাজ করো। এবার সংখ্যাটিকে ১০ বার, ১১ বার এবং ১২ বার গুণ করে নিচের ছকে শুধু গুণাকারে লেখো।

ছক ১.৭

গুণাকার

গুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?

 

 

 

 

ছকে গুণাকারে লিখতে অনেক জায়গা ও সময় লাগলো, তাই না? কিন্তু, আসলে খুব সহজে, অল্প জায়গায় ও একদম অল্প সময়ে এরকম বড় বড় গুণাকারগুলো লিখে ফেলা সম্ভব। চিন্তা করে দেখো, তো ছক ১.৩ থেকে ছক ১.৬-এ, প্রতি ক্ষেত্রে গুণাকারে কতটি করে সংখ্যা ছিল? আমরা খুব সহজেই সেটির সাহায্যে গুণাকারটিকে অন্য উপায়ে লিখতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা আরেকটি ছকের সাহায্য নিবো।

ছক ১.৮

গুণাকার

গুণফল

গুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?

গুণফল লেখার নতুন উপায়

১০ × ১০

১০০

১০

১০ × ১০ × ১০

১০০০

১০

১০ × ১০ × ১০ × ১০

১০০০০

১০

১০ × ১০ × ১০ × ১০× ১০

১০০০০০

১০

তোমরা কি বুঝতে পারছো এখানে কি হচ্ছে? এখানে যতটি একই সংখ্যা গুণাকারে রয়েছে আগে সেটিকে লেখা হচ্ছে এবং এর পরে যতবার রয়েছে তাকে সেই সংখ্যাটির উপরে ডান পাশে বসানো হয়েছে

এখন নিজেরা দেখো তো কাজটি করতে পারো কিনা। নিচের ছকটি পূরণ করে ফেলো।

ছক ১.৯

তোমার নেয়া সংখ্যাটি কত ছিল? ৫ নাকি ৬?গুণাকারগুণফলগুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?গুণফল লেখার নতুন উপায়
   
  
  
  
  

এবার চিন্তা করো। তুমি তোমার নেয়া সংখ্যাটিকে ১০ বার, ১১ বার এবং ১২ বার গুণ করে ছক পূরণ করেছিলে। কাজটি করতে কষ্ট হয়েছিল তাই না? তাহলে নিচের ছকটিতে নতুন যে নিয়ম শিখলে সেটি অনুযায়ী দেখো তো লিখতে পারো কীনা?

ছক ১.১০

তোমার নেয়া সংখ্যাটি কত ছিল? ৫ নাকি ৬?গুণাকারগুণফলগুণাকারে আলাদাভাবে একই সংখ্যা কতটি রয়েছে?গুণফল লেখার নতুন উপায়
     
    
    

খেয়াল করো: চিত্র ৭.২.৩-তে দেখো, একই সংখ্যা বার বার গুণ আকারে লেখার বদলে আমরা ঐ সংখ্যার ডানপাশে উপরে ছোট করে নির্দেশ করে দিচ্ছি একই সংখ্যাকে কতবার গুণ করা হয়েছে। গণিতের ভাষায় একে বলে সূচক। নিচের ছবিটি দেখো।

৩ হলো ভিত্তি। আর ৩-কে যেহেতু ৪ বার গুণ করা হয়েছে, তাই ৪ হলো ৩-এর সূচক। আমরা নতুন আরও একটি শব্দ শিখেছি- শক্তি বা power.

তাহলে বোঝা গেলো যে সূচকের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই বড় একটি গুণের কাজকে এক নিমেষেই সংক্ষেপে প্রকাশ করতে পারি। তাহলে এবার দেখে নেওয়া যাক সূচক দিয়ে সংখ্যাকে প্রকাশ করলে তা কীভাবে পড়বো 

সূচকীয় রাশিকীভাবে পড়বো?

৩ to the power ২ বা ৩-এর সূচক বা ঘাত ২।  

[কোন সংখ্যার সূচক বা ঘাত ২ এর অর্থ হলো সেই সংখ্যাকে বর্গ করা হয়েছে। ৩-এর ক্ষেত্রে তাই আমরা একে ৩ squared অথবা ৩-এর বর্গ-ও বলতে পারি।]

৩ to the power ৩ বা ৩-এর সূচক বা ঘাত ৩।

[কোন সংখ্যার সূচক বা ঘাত ৩ এর অর্থ হলো সেই সংখ্যাকে ঘন করা হয়েছে। ৩-এর ক্ষেত্রে তাই আমরা একে ৩ cubed অথবা ৩-এর ঘন-ও বলতে পারি।]

৩ to the power ৪, বা ৩ এর সূচক বা ঘাত ৪
৩ to the power ৫, বা ৩ এর সূচক বা ঘাত ৫

এই যে বড় বড় গুণাকারকে সহজে লেখার যে পদ্ধতি দেখানো হল, সেটিই মূলত সূচকীয় পদ্ধতি

এখন আরেকটি বিষয় নিয়ে ভাবি। এতক্ষণ দেখা গিয়েছে, একটি গুণাকার কাঠামোতে, একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা বা ভিত্তি যে কয়বার থাকছে, সেই সংখ্যাটিকে ওই ভিত্তির জন্য আমরা সূচক বা ঘাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। না বুঝতে পারলে উপরের চিত্রটি আবার দেখো।

এবার, ছক ১.৮ থেকে একটি উদাহরণ দেখা যাক।

১০ = ১০ × ১০ × ১০

এখানে ৩ টি ১০ গুণাকারে আছে দেখে ১০ এর উপর ঘাত হিসেবে রয়েছে ৩।

তাহলে চিন্তা করে দেখো, ছক ১.৩ এ তুমি কি করেছিলে? গুনে দেখো সেখানে কতটি সংখ্যা ছিল? সেখানে কিন্তু ১ টি মাত্র সংখ্যা ছিল। আবার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শুধু ১০ লিখলে সেখানে ১ টিই ১০ থাকে

এই ক্ষেত্রেও সূচকীয় প্রকাশ করা যায়। আর সেই ঘাত বা সূচকটি আমাদের নতুন শেখা নিয়ম অনুযায়ীই হবে। অর্থাৎ, শুধু একটি সংখ্যা বা ১০ কে লেখা যায় ১০১ হিসেবে।

তাহলে ছক ১.১১ পূরণ করো। পরবর্তীতে ছক ১.১১ এর ন্যায় ছক নিজের খাতায় অঙ্কন করো এবং ৯ সংখ্যাটির জন্য সেটি পূরণ করো।

ছক-১.১১

সংখ্যা

ঘাত

গুণাকারে লেখো

সূচকীয় পদ্ধতিতে লেখো

গুণফল

১০

১০

১০

১০ × ১০

 

১০০

 

১০০০

১০ × ১০ × ১০ × ১০

 

১০০০০

 

১০০০০০

১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০

 

১০০০০০

আশা করি তোমরা এতক্ষণে সূচক সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছো। এবার তাহলে আমরা নিচের ছকটি পূরণ করার চেষ্টা করি।

ছক ১.১২

গুণ-আকার

সূচকীয় আকার

ভিত্তি

ঘাত

××××××××××××××

 

 

 

১৪ × ১৪ × ১৪ × ১৪ × ১৪

 

 

 

×××××××××

 

 

 

১১ × ১১ × ১১ × ১১ × ১১ × ১১ × ১১ × ১১

 

 

 

২১

 

 

 

চলো, আমরা আবার আমাদের সেই কাগজ ভাঁজের খেলার কথা ভাবি। তোমরা সেখান থেকে কি সূচকের কোন ধারণা করতে পারো? যদি পারো, তাহলে, ছক ১.১৪ পূরণ করো এবং পরবর্তীতে প্রতিবারে সমান ৩ ভাগ করে ভাঁজের জন্য ছক ১.১৪ এর ন্যায় নিজের খাতায় ছক অঙ্কন করে পূরণ করো।

ছক ১.১৩

ভাঁজের প্রকৃতিভাঁজ সংখ্যাঘর সংখ্যাগুণাকারসূচকীয় আকার
প্রতিবারে সমান ২ ভাগ করে ভাঁজ  
   
   
   
   

এখন একটি বিষয় চিন্তা করো, তুমি যখন কোন ভাঁজ করো নি, তখনও কিন্তু চারপাশে দাগটানা পুরো কাগজটিকেই একটি ঘর হিসেবে চিন্তা করা যায়।

কোন ভাঁজ না থাকলে ভাঁজ সংখ্যা ০, কিন্তু ঘর কতটি থাকছে? ১ টি। এবার আরেকটি মজার বিষয় দেখো, তুমি প্রতিবারে যে কয়টি করেই ধনাত্মক সংখ্যক ভাঁজ করতে চাও না কেন, একদম প্রথমবারে, অর্থাৎ শূণ্য ভাঁজে ঘর সেই ১ টিই থাকবে। এখান থেকে তোমরা কিছু বুঝতে পারছো কি?

কাজ:

১) উপরে সেই রাজার অঙ্কের যে ছকটি ছিল সেটিকে তোমার খাতায় নিচের ছকের মত সম্পূর্ণ করো।

দিন

সূচকীয় আকার

টাকার পরিমাণ

 

 _____________________

২৯

 

 

৩০

 

 

০ ও ১ এর সূচক

তোমাদের বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে, তোমাদের শ্রেণিতে মোট ৫ দিন ধরে ক্যান্ডি দেয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম আছে। প্রথমত কে কতটি করে ক্যান্ডি পাবে, তা নির্ভর করবে প্রত্যেকের রোল নম্বরের উপর। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রোল নম্বরের শেষ অঙ্কের সাপেক্ষে এই ক্যান্ডি প্রদান করা হবে। এখন যাদের রোল এক অঙ্কের, তাদের ওই এক অঙ্কই গ্রহণযোগ্য অঙ্ক।

এখন কীভাবে রোলের শেষ অঙ্কের সাহায্য নিয়ে ক্যান্ডি প্রদান করা হবে?

প্রথম দিন রোলের শেষ অঙ্ক যা, একজন শিক্ষার্থীকে সেই সংখ্যক ক্যান্ডি দেয়া হবে।

পরের দিন, অর্থাৎ দ্বিতীয় দিন একজন শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত ক্যান্ডি সংখ্যা হবে, আগের দিনে পাওয়া ক্যান্ডির সংখ্যার সাথে তার রোলের শেষ অঙ্ক গুণ করা হলে, গুণফল যা হবে সেই সংখ্যক।

তৃতীয় দিনে, গত দুইদিন সে যে কয়টি ক্যান্ডি পেয়েছিলো, সেটির সাথে তার রোলের শেষ অঙ্কের যে গুণফল, সেই গুণফলের সংখ্যক ক্যান্ডি পাবে।

এই নিয়মেই বাকি দুইদিন সকলে ক্যান্ডি পাবে।

প্রথমেই তোমরা তোমাদের রোল নম্বর চিন্তা করো এবং নিজের রোলের শেষ অঙ্কটি নাও। নিয়ম অনুযায়ী, তোমার রোল যদি এক অঙ্কের হয়, তাহলে সেটিই তোমার রোলের শেষ অঙ্ক বা গ্রহণযোগ্য অঙ্ক।

তাহলে, নিচের ছকটি পূরণ করে ফেলো তো।

ছক ১.১৮

রোল

রোলের শেষ অঙ্ক

দিন

প্রাপ্ত ক্যান্ডি সংখ্যা

১ম দিন

২য় দিন

×

৩য় দিন

××

৪র্থ দিন

 

৫ম দিন

 

এখন তোমরা একটি বিষয় দেখো তো। তোমাদের শ্রেণিতে যাদের রোলের শেষে ০ অথবা ১ ছিল, তারা আসলে ৫ দিন শেষে কতটি ক্যান্ডি পেয়েছে? কিংবা তাঁদের প্রতিদিনের প্রাপ্ত ক্যান্ডির সংখ্যা কত?

খেয়াল করলে দেখবে যাদের রোলের শেষ অঙ্ক ০ তারা কোনদিনই ক্যান্ডি পায় নি। আবার যাদের রোলের শেষ অঙ্ক ১, তারা প্রতিদিনই একটি করে ক্যান্ডি পেয়েছে গেছে। অর্থাৎ, তাদের কারোরই প্রতিদিনে প্রাপ্ত ক্যান্ডি সংখ্যায় কোন পরিবর্তন আসে নি। অর্থাৎ ০ ও ১ এর উপর সূচক বসলেও তা যথাক্রমে ০ ও ১ ই থাকে। তবে মনে রাখবে ০ এর উপর কিন্তু কখনও সূচক হিসেবে ০ হয় না। কেন হয় না ভেবে দেখতে পারো কী?

সূচক নিয়ে কারিকুরি

আমরা একটি অদ্ভুত মহাকাশযানের গল্প শুনি। অদ্ভুত কেন বলছি? কারণ এই মহাকাশযানটির গতিবেগ সবসময় ৪ ভিত্তিতে হয়। অর্থাৎ, এর বেগটি প্রতি সেকেন্ডে ৪ এর কোন না কোন ধনাত্মক ঘাত হয়। আরেকটু সহজে বললে, মহাকাশযানটির ১ সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দুরত্ব ৪ এরই কোন ধনাত্মক ঘাত হবে। উদাহরণ হিসেবে আমরা চিন্তা করতে পারি। এই ক্ষেত্রে মহাকাশযানটি এক সেকেন্ড চললে,  মিটার দুরত্ব অতিক্রম করবে।

তবে মনে রাখতে হবে এই বেগটি কিন্তু নির্দিষ্ট নয়। এটি বাড়তে পারে, আবার কমতেও পারে। শুধু এটুকু নিশ্চিত বেগটি সর্বদাই ৪ এর ঘাত হবে। 

মহাকাশযানের চালক, মহাকাশযানের মনিটরে বসে দেখতে পারেন সময়ের সাপেক্ষে সেই মহাকাশযানটি কতদূর অতিক্রম করলো। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সেই মনিটরে আবার সময়টিও ৪ এর ঘাত হিসেবে দেখা যায়। অর্থাৎ, চালক চাইলেই ২ সেকেন্ড পর অতিক্রান্ত দূরত্ব দেখতে পারবেন না। তিনি ৪' = ৪ সেকেন্ড বা ৪২ = ১৬ সেকেন্ড এরকম সময় ব্যবধানেই বিমানের অতিক্রান্ত দুরত্বটি দেখতে পাবেন। মনিটরে সময়ের এই ব্যাপারটি একটি ক্রম মেনেই চলবে। যেমন চালক প্রথমে ৪' সেকেন্ড সময় ব্যবধানে অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখতে পাবেন। এরপর এই ৪' সেকেন্ড এর পর হতে, পরবর্তী ৪২ সেকেন্ডে মহাকাশযানটি কতটুকু দুরত্ব অতিক্রম করলো সেটি দেখতে পাবেন। তারপর, আবার ৪২ সেকেন্ড হতে পরবর্তী ৪° সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দুরত্বটি দেখতে পারবেন এবং এভাবে চলবে। এটুকু মনে রাখতে হবে, কখনই ৪২ সেকেন্ডের পর পরবর্তী ৪০ সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখা যাবে না।

একদিন মহাকাশযানটি চালনা করার সময় চালক দেখলেন তাঁর বেগটি নির্দিষ্ট এবং সেই বেগটি হলো প্রতি সেকেন্ডে  =  মিটার। এটি বাড়ছেও না কমছেও না। তিনি প্রথমে সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর অতিক্রান্ত দুরত্বটি দেখতেও পেলেন। তিনি এর পরবর্তী সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখার পর, মহাকাশযানটি হঠাৎ একটি ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো এবং এর পরবর্তী সময় ব্যবধান থেকে মনিটরে কোন অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখা গেল না। মহাকাশযানের চালক মুশকিলে পড়লেন, কারণ তাঁর এই অতিক্রান্ত দুরত্বগুলো জানা জরুরি। তুমি কি মহাকাশযান চালককে একটু সাহায্যে করতে পারবে?

চিন্তা করো, মহাকাশযানটি ১ সেকেন্ডে   =  মিটার দুরত্ব অতিক্রম করে

তাহলে, সেকেন্ডে কত দুরত্ব অতিক্রম করবে? ঐকিক নিয়মের ধারণা থেকে আমরা বলতে পারি, সেকেন্ড সময় ব্যবধানে মহাকাশযানটির অতিক্রান্ত দুরত্ব হবে  =  = × =

তাহলে, দ্বিতীয় সময় ব্যবধানে মহাকাশযানটির অতিক্রান্ত দুরত্ব কত হবে ভেবে বের করতে পারবে?

মহাকাশযানটি ১ সেকেন্ডে অতিক্রম করে   = 8 মিটার অতএব,  সেকেন্ডে অতিক্রম করবে × = × × =   

ছক ২.১ (আংশিক পূরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে নিজের খাতায় ছকটি অঙ্কন করে পূরণ করো)

সময় ব্যবধান (সেকেন্ড)

গতিবেগ (মিটার, প্রতি সেকেন্ড)

অতিক্রান্ত দুরত্বের গুণাকার (মিটার)

অতিক্রান্ত দুরত্ব (সূচকীয় আকারে) (মিটার

×=×

×=××

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এভাবে উপরের ন্যায় ৭ টি সময় ব্যবধান অতিক্রান্ত হওয়ার পর চালক মহাকাশযানটি অবতরণ করান এবং কারিগরি দলকে মনিটরের ত্রুটি ঠিক করার নির্দেশনা দেন।

কিন্তু, পরবর্তী দিন অতি জরুরি একটি কারণে চালককে আবার মহাকাশযানটি চালনা করতে হয়। ফলে মনিটরের ত্রুটিটি থেকেই যায়। তবে, আগের দিন যেমন প্রথম দুটি সময় ব্যবধানে চালক তাঁর অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখতে পেয়েছিলেন, এই দিন শুধু প্রথম সময় ব্যবধানে তাঁর অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখতে পেলেন এবং বাকি কোন সময় ব্যবধানেই তাঁর অতিক্রান্ত দুরত্ব দেখতে পেলেন না। এদিন আরেকটি ভিন্নতা ছিল। আগের দিনে যেমন প্রতি সময় ব্যবধানে মহাকাশযানটির গতিবেগ একই ছিল, এদিন কিন্তু তাঁর মহাকাশযানের গতিবেগ প্রতিটি সময় ব্যবধানে ভিন্ন ছিল। সেদিনে, তাঁর রকেটের সময় ব্যবধান ও বেগ ছকে দেয়া আছে। প্রতি সময় ব্যবধানে অতিক্রান্ত দুরত্বটি নির্ণয় করে, তোমরা কী চালককে সাহায্য করতে পারবে?

ছক ২.২

(আংশিক পূরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে নিজের খাতায় ছকটি অঙ্কন করে পূরণ করো)

সময় ব্যবধান (সেকেন্ড)গতিবেগ (মিটার, প্রতি সেকেন্ড)অতিক্রান্ত দুরত্বের গুণাকার (মিটার)অতিক্রান্ত দুরত্ব (সূচকীয় আকারে) (মিটার)

8 × 8 = (8) × (8 × 8 × 8 × 8 × 8)

= 8 × 8 × 8 × 8 × 8 ×

  
  
  
  
  
  
  

এখন, প্রতিবারে একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে অতিক্রান্ত দুরত্ব নির্ণয় করতে গিয়ে তোমাকে কি করতে হচ্ছে? প্রতিবারে সূচকাকারকে ভেঙ্গে গুণাকারে লিখতে হচ্ছে। তারপর গুণাকারে থাকা মোট সংখ্যাগুলো গণনা করতে হচ্ছে। এরপরে আবার সূচকীয় আকারে লিখতে হচ্ছে। এই কাজটি করার জন্য নিশ্চয় অনেক সময় লাগছে, আবার অনেক পরিশ্রম করা লাগছে। কিন্তু আমরা তো দেখেছি সূচকের সাহায্যে অনেক বড় বড় গুণকে সহজে ও কম সময়ে লিখে ফেলা যায়। তবে, প্রতিবার যদি এমনভাবে বড় বড় গুণাকার নিয়ে কাজ করা লাগে তাহলে কি কাজ সহজ হয়? তাই, এসো আমরা আরেকটি নতুন বিষয় শিখি। এবারও তোমাদের জোড়-বিজোড় রোলের সাহায্য নিব। অর্থাৎ, যাদের রোল জোড়, তারা ৬ সংখ্যাটি ব্যবহার করবে এবং যাদের রোল বিজোড় তারা ৫ সংখ্যাটি ব্যবহার করবে।

নিচের ছক-২.৩ ভাল করে লক্ষ্য করো। সাহায্যের জন্য পুরো ছকটি পূরণ করে দেয়া আছে। এর সাহায্যে পরবর্তীতে ছক-২.৪ পূরণ করতে হবে।

ছক-২.৩

(ছকে গুণের ভিত্তি হিসেবে ১০ ধরা হয়েছে।)

গৃহীত সংখ্যাগুণগুণের ১ম পদ১ম পদের গুণাকার কাঠামোগুণের ২য় পদ২য় পদের গুণাকার কাঠামোগুণফলগুণফলের সূচকীয় কাঠামো
১০x১০ × ১০১০ × ১০ × ১০ × ১০১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০
 x ১০ × ১০ × ১০১০ × ১০ × ১০১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০
×১০ × ১০ × ১০ × ১০১০১০ × ১০ × ১০ × ১০ × ১০
×১০ × ১০১০১০ × ১০ × ১০
×১০১০ × ১০ × ১০১০ × ১০ × ১০ × ১০

ছক-২.৪

(ছক ২.৩ এর কাজ অনুযায়ী ১০ এর বদলে তোমার নেয়া সংখ্যাকে ভিত্তি ধরে নিচের ছকে গুণফল কি হবে তা নির্ণয় করো এবং প্রয়োজনে নিজের খাতায় ছকটি সম্পূর্ণ করো।)

গৃহীত সংখ্যাগুণগুণের ১ম পদ১ম পদের গুণাকার কাঠামোগুণের ২য় পদ২য় পদের গুণাকার কাঠামোগুণফলগুণফলের সূচকীয় কাঠামো
×      
×      
×      
×      
×      

এখন ছক-২.৩ ও ছক-২.৪ এর আলোকে তুলনা করার চেষ্টা করো। কি বুঝতে পারলে? যদি একই ভিত্তি হয়, তাহলে দুটি সূচকীয় কাঠামোকে গুণ করা হলে, গুণফলটিও একই ভিত্তির একটি সূচকীয় কাঠামো হয়। নতুন সূচকীয় কাঠামোর সূচক বা ঘাতটি হয়, গুণ্য ও গুণকের সূচক বা ঘাতের যোগফল। এরপরে প্রদত্ত ছকের সাহায্যে বিষয়টি আরও ভালভাবে বোঝা যাবে। ছকটি আংশিক পূর্ণ করা রয়েছে

ছক ২.৫ (ছক-২.৩ ও ছক ২.৪ এর ক্রমিক অনুযায়ী ছকটি পূরণ করতে হবে। ছকটি আংশিক পূরণ করা আছে। তোমার শিখন ও ছক দুটি হতে প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে ছকটি সম্পূর্ণ করো)

একই ভিত্তির দুটি বা ততোধিক সূচকীয় রাশির গুণফলটিকে ওই একই ভিত্তির আরেকটি সূচকীয় আকারে প্রকাশ করা সম্ভব। গুণফলের সূচকটি হবে গুণাকারে থাকা ঐ ভিত্তিরই সকল রাশির সূচকগুলোর যোগফল।

কাজ:

১) সূচকের গুণের নিয়মের সাহয্যে গুণফল নির্ণয় করো। (গুণফল ০ অথবা ১ হলে, ভিত্তিতে ০ অথবা ১ থাকবে সূচকের মান সম্পর্কে যা শিখেছো সেই অনুযায়ী গুণফল লিখবে)

২) সূচকের গুণের নিয়মের সাহায্যে খাতায় ছক ২.২ এর অনুরূপ ছক অঙ্কন করে তা পূরণ করো।

৩) হাসান দুটি সূচকীয় আকারের সংখ্যা গুণ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছে। সেই সংখ্যা দুটি হল ৫ এবং ১২। সে সংখ্যা দুটিকে ছকের মত করে দুইবার গুণাকারে লিখলো। দেখো তো সে ঠিক লিখেছে কীনা?

যদি হাসানের করা দুটি গুণ প্রক্রিয়ার কোনটি ঠিক হয় তবে সেই প্রক্রিয়ায় তুমি ২০ এবং ৫৪ এর গুণফল নির্ণয় করো। যদি হাসানের করা গুণ প্রক্রিয়া ভুল হয়, তবে তুমি হাসানের ভুলটি চিহ্নিত করে সঠিক গুণফল নির্ণয় করো এবং পরবর্তীতে সঠিকভাবে ২০ এবং ৫০ এর গুণফল নির্ণয় করো।

সূচকের ভাগ-১

চলো আমরা পূর্বের সেই রাজার গল্পের ন্যায় ভাবার চেষ্টা করি। কিন্তু উল্টোভাবে। দুটো দলে ভাগ হয়ে এই গল্পের কাজটি চিন্তা করব। একটি দলের নাম "ক" এবং আরেকটি দলের নাম "খ"।

"ক" দলের কাছে ২১০ = ১০২৪ টি লজেন্স আছে। কিন্তু "খ" দলের কাছে কোন লজেন্স নিই। এখন “ক” দল, “খ” দলকে লজেন্স দেবে। কিন্তু সেখানে একটি নিয়ম আছে।

নিয়মটি হল, "ক" দল, “খ” দলকে প্রতিদিন আগের দিনের অর্ধেক সংখ্যক লজেন্স দেবে। অর্থাৎ, “ক” দল কোন একদিন যে পরিমাণ লজেন্স দেবে পরেরদিন সেটিকে ২ দ্বারা ভাগ করে যে ভাগফল পাওয়া যায়, সেই সংখ্যক লজেন্স দেবে। মনে রাখতে হবে যে, শুধুমাত্র পূর্ণসংখ্যক লজেন্সই দেয়া যাবে। কখনই লজেন্সকে ভেঙ্গে অর্ধেক করে, কিংবা সেটিকে আবার অর্ধেক করে দেয়া যাবে না। এভাবে যতদিন লজেন্স দেয়া সম্ভব, ততদিন চলতে থাকবে।

ধরো প্রথম দিনে, "ক" দল, “খ” দলকে ২৫ সংখ্যক লজেন্স দিয়েছে। তাহলে পরেরদিন কতটি দেবে? কিংবা তার পরেরদিন কতটি দেবে? সেই তথ্য বের করার জন্য এবার ছকটি পূরণ করো।

ছক ৩.১

(যদি কোনদিন লজেন্স দেয়া সম্ভব না হয় অথবা সূচকীয় আকারে প্রকাশ করা সম্ভব না হয়, তবে সেই ঘরে ক্রস চিহ্ন দেবে)

এভাবে ছকের মাধ্যমে তুমি আগের দিনে প্রদত্ত লজেন্স সংখ্যা জেনে পরেরদিন প্রদত্ত লজেন্স সংখ্যা হিসাব করতে পারছো। কিন্তু, তোমার কাছে যদি সরাসরি জানতে চাওয়া হয় যে ৪র্থ দিনে কতটি লজেন্স দেয়া হয়েছে, তুমি কীভাবে বলবে? নিশ্চয় এভাবে ছকের মত করে অথবা প্রতিদিনে প্রদত্ত লজেন্সের তথ্য ব্যবহার করে। এবার তোমরা কল্পনা করো, শুরুতে "ক" দলের কাছে লজেন্সের পরিমাণ ছিল ২১২ টি। প্রথম দিন তারা “খ” দলকে ২১০ সংখ্যক লজেন্স প্রদান করে। এরপর পূর্বের নিয়ম মেনেই চকলেট প্রদান থাকে যতদিন সম্ভব হয়। এখন ভাবো তো, তোমার কাছে যদি জানতে চাওয়া হয় ৮ম দিনে "খ" দল কতটি চকলেট পেয়েছে, তা নিচের ছকের সাহায্যে নির্ণয় করো?

ছক ৩.২

দেখো, এই কাজটি করতে অনেক পরিশ্রম হচ্ছে এবং অনেক সময়ও ব্যয় হচ্ছে। তাই এ পর্যায়ে চলো, গুণের মত সূচকের ভাগেরও যে সহজ উপায় আছে তা দেখি আমরা পূর্বে সূচকের গুণের পদ্ধতি যেভাবে ছকের মাধ্যমে দেখেছি, এখানেও সেভাবেই দেখার চেষ্টা করব। তোমরা আবার জোড় ও বিজোড় রোল দুইভাগে ভাগ হয়ে যাও। এবং আবার জোড় রোলধারীরা ৬ সংখ্যাটি নাও এবং বিজোড় রোলধারীরা ৫ সংখ্যাটি নাও।

এবার পরবর্তী ছক-৩.৩ ভাল করে লক্ষ্য করো। সাহায্যের জন্য পুরো ছকটি পূরণ করে দেয়া আছে। এর সাহায্যে পরবর্তীতে ছক-৩.৪ পূরণ করতে হবে।

ছক ৩.৩

ছক-৩.৪

(ছক ৩.৩ এর ক্রমিক অনুযায়ী ১০ এর বদলে তোমার নেয়া সংখ্যাকে ভিত্তি ধরে নিচের ছকে ভাগ কি হবে তা নির্ণয় করো এবং প্রয়োজনে খাতায় ছকটি সম্পূর্ণ করো)

ছক-৩.৩ ও ছক-৩.৪ এর আলোকে তুলনা করার চেষ্টা করো। কি বুঝতে পারলে? যদি ভিত্তি একই হয়, তাহলে দুটি সূচকীয় কাঠামোকে ভাগ করা হলে, ভাগফলটিও একই ভিত্তির নতুন একটি সূচকীয় কাঠামো হয়। নতুন সূচকীয় কাঠামোর সূচক বা ঘাতটি হয়, ভাঁজ্যের সূচক বা ঘাত হতে ভাঁজকের সূচক বা ঘাতের বিয়োগফল। নিচের ছকের সাহায্যে বিষয়টি আরও ভালভাবে বোঝা যাবে। ছকটি আংশিক পূর্ণ করা রয়েছে

ছক ৩.৫ (ছক-৩.৩ ও ছক ৩.৪ এর ব্যবহৃত তথ্য অনুযায়ী ছকটি পূরণ করতে হবে। ছকটি আংশিক পূরণ করা আছে। তোমার শিখন ও ছক দুটি হতে প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে ছকটি সম্পূর্ণ করো)

একই ভিত্তির দুটি সূচকীয় রাশির ভাগফলটিকে ওই একই ভিত্তির আরেকটি সূচকীয় আকারে প্রকাশ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে ভাগফলের সূচকটি হবে ভাঁজ্যের সূচক হতে ভাঁজকের সূচকের বিয়োগফল।

ঘাত যখন ০

এবার একটি বিষয় লক্ষ্য করো। ছক ৩.২ এর সর্বশেষ সারিতে আমরা কাজটি কি করেছি ভাবো তো? আমরা ১০ কে ১০ দিয়ে ভাগ করেছি মূলত। কিন্তু সূচকীয় ভাগে এটি হয়ে যায়। এখন আমরা সূচকের ভাগের নিয়মটি কি শিখেছি দেখো তো? সেই নিয়ম থেকে কিন্তু লেখা যায়,

মনে করার চেষ্টা করো, আমরা শুরুতেই কাগজ ভাঁজ করার খেলা খেলেছিলাম? সেখানে আমরা কি দেখে এসেছিলাম বলো তো? যখন কোন ভাঁজ নেই, তখনও একটি ঘর পাওয়া যায়। অর্থাৎ ০ ভাঁজে আমরা ১ টি ঘর পেয়েছিলাম। আবার উপর থেকে সূচকের সূত্রের সাহায্যে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? ১০ এর উপর সূচক ০ হলে সেটি ১ হয়।

এবার তাহলে ঝটপট নিচের ছকটি পূরণ করে ফেলো তো।

ছক ৩.৫ (আংশিক পূরণ করা রয়েছে)

এখান থেকে তোমরা আসলে কি দেখতে পারছো বলো তো? একটু ব্যাখ্যা করলে বলা যায় সাধারণ ভাগের নিয়মে আমরা কোন সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল ১ পাই। এখন চিন্তা করো কখন কোন সংখ্যার উপর সূচক ০ হয়? যখন সেই সংখ্যাটিকে সেই সংখ্যা দ্বারা অথবা সেই সংখ্যার কোন সূচকীয় আকারকে একই আকার দ্বারা ভাগ করা হয়। তারমানে যেকোনো সংখ্যার উপর সূচক ০ হলে সেই সূচকীয় ফলটি হবে ১।

এবার কি তোমার কাগজ ভাঁজের সাথে তুমি কোন মিল খুঁজে পাচ্ছো? এবার আরেকটি বিষয় নিয়ে ভাবি। ০ এর উপর কি সূচক ০ হতে পারে? এবার দেখো আমরা ছক ৩.৫ এরই সাহায্য নিব। চলো ছকটির প্রথম সারিতে আমরা (108) / (108) এর বদলে (08 ) / (o8) নিয়ে ভাবি। এখন,

ছক ৩.৬

এখন বলো তো কেন এটি সম্ভব হচ্ছে না? কারণটি দেখো, আমরা শিখে এসেছি, O ^ 8 হল আসলে ০। তাহলে আমরা এই ভাগফল পাই ০/০  এখন ০ কে কি ০ দিয়ে ভাগ করা সম্ভব? তোমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে কিন্তু দেখে এসেছো যে ০ দ্বারা কোন সংখ্যাকে ভাগ করা সম্ভব নয়।তাহলে 0/0 ও কিন্তু সম্ভব নয়। তাই ০ এর উপর সূচক ০ হতে পারে না। এভাবে চিন্তা করে দেখো, যেকোনো ক্ষেত্রেই  ০ /০ নির্ণয় করার জন্য আমাদের ০ কে০ দিয়ে ভাগ করার প্রয়োজন হয়। যা আমরা করতে পারছি না। এজন্যেই ০ এর উপর সূচক ০ হলে, সেই সূচকের কোন মান থাকে না। এখানে তুমি আসলে কাগজ ভাঁজের কথাও চিন্তা করতে পারো। তুমি কি আসলে ভিত্তি ০ ধরে, অর্থাৎ প্রতিবারে ০ টি করে ভাঁজ করতে পারো কোনভাবে?

০ ব্যতীত যেকোনো সংখ্যার সূচক বা ঘাত ০ হলে সেই সূচকের মান হবে ১।

 

সূচকের ভাগ-২

চলো আমরা আবার কাগজ নিয়ে কিছু কাজ করি। তোমরা একটি কাগজ কেটে একটি বৃত্ত তৈরি করো। এবার সেই বৃত্তটিকে সমান দুই খণ্ডে কাটো। ফলে দুটি খন্ড তৈরি হল। এবার ভাবো তো এই যেকোনো একটি খন্ড ওই বৃত্তের কত অংশ? সেটি পরবর্তী পৃষ্ঠার ছকে দেখো।

ছক ৪.১

এবার দুটি খন্ডকেই আবার পূর্বের ন্যায় সমান দুইভাবে কাটো এবং ভাবো একটি খন্ড, পূর্ণ বৃত্তের কত অংশ। পূর্বের ন্যায় নিচের ছকটি পূরণ করো।

ছক ৪.২

এভাবে কাজটি আরও ৩ বার করার চেষ্টা করো এবং নিচের ছকে তোমার প্রাপ্ত তথ্য বসাও।

ছক ৪.৩

দেখো, আমরা প্রত্যেকবারই খন্ড করছি। অর্থাৎ, সাধারণভাবে চিন্তা করলে খন্ড বা ভাগ করার চেষ্টা করছি। এখানে কি সূচকের কোন ধারণা করতে পারো তুমি? তুমি পূর্বের সূচকের ভাগের ধারণাটি একটু ভেবে দেখতে পারো।

তোমাদের সাহায্যের জন্য ছক ৪.১ কিছুটা ব্যাখ্যা করা যাক। দেখো, আমরা ১ বার কেটে খণ্ড পাই কতটি? ২ টি। এবং একেকটি খন্ড বৃত্তের। - অংশ। এখন দেখো, আমরা প্রতিবার দুটি করে খন্ড করছি বৃত্তকে। তোমরা যদি শুরুতে কাগজ ভাঁজের খেলাটি বুঝে থাকো, তাহলে বলতে পারবে আমাদের ভিত্তি কিন্তু ২। কিন্তু এখানে আমরা ভাগ করছি এবং বিশেষভাবে কেটে, খন্ড করে ভাগ করছি। তুমি বাকি ছকগুলো দেখলে এবং সেখানে থেকে সূচকের ধারণা ব্যবহার করতে পারলে বুঝতে পারবে এখানে সূচকের ব্যবহার রয়েছে। এদিকে, আমরা যখন কেটে ফেলছি, সেই কাজটিকে আমরা কিন্তু বাদ কিংবা বিয়োগ হিসেবে চিন্তা করতে পারি। তাহলে এবার ভেবে দেখো তো কিছু বুঝতে পারো নাকি? এখন, আমরা সূচকের ভাগ বোঝার সময় যেভাবে দুটি দলের মাঝে লজেন্স প্রদানের খেলাটি খেলেছিলাম, সেটিই আবার খেলার চেষ্টা করব। পুরো খেলার নিয়মটি আগের মতই থাকবে, শুধু একটিমাত্র পরিবর্তন

হবে। সেই খেলায় দলদুটি শুধু পূর্ণসংখ্যক লজেন্স আদান-প্রদান করতে পেরেছিলো। কিন্তু এবার দল দুটি শুধু পূর্ণসংখ্যক নয়, বরং ভগ্নাংশ সংখ্যকও লজেন্সও আদান-প্রদান করতে পারবে। অর্থাৎ, একটি লজেন্সকে চাইলে ২ ভাগ, কিংবা ৪ ভাগ করে সেই অংশগুলোও দেয়া যাবে।

এবার ভেবে দেখো তো কি হতে পারে? পূর্বের ছকটি কল্পনা করো এবং সেটি পূরণ করার চেষ্টা করো তো। ছক ৪.৪ (যদি কোনদিন লজেন্সের সংখ্যাকে সূচকীয় আকারে প্রকাশ করা সম্ভব না হয়, তবে সেই ঘরে ক্রস চিহ্ন দেবে. প্রয়োজনে নিজের খাতায় ছকটি অঙ্কন করে পূরণ করতে পারো।)

এখন ভাবো তো কি পরিবর্তন হলো আসলে?

দেখো, এতক্ষণ আমরা যা কিছু দেখেছি, সেখানে সেখানে কোন ক্ষেত্রেই প্রাপ্ত ঘাতটি ঋণাত্মক অথবা শূণ্য হয় নি। তাহলে চলো এবার সেই বিষয়টি দেখি। এক্ষেত্রে মনে রাখবে, আমরা পূর্বে ভাগফলের যে নিয়ম শিখেছি তা কিন্তু সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

চলো আমরা ঠিক ছক ৩.৩ এর মত করেই এই বিষয়টি শেখার চেষ্টা করব। তবে উলটো উপায়ে। উক্ত ছকে যেটি ভাঁজ্য ছিল, আমরা এখানে সেটিকে ভাঁজক এবং উক্ত ছকে যেটি ভাঁজ্য ছিল সেটিকে ভাঁজ্য ধরব। তবে আমরা ছক ৩.৩ এর মত ক্রমিক অনুসরণ করব না। এবার তাহলে নিচের ছকটি দেখি চলো।

ছক-৪.৫

এবার এর সাহায্যে আবার আগের ন্যায় ছক ৪.৬ পূরণ করো।

ছক ৪.৬ (গৃহীত সংখ্যাটি হবে, পুনরায় তোমার রোল জোড়, কিংবা বিজোড় কীনা সেই অনুযায়ী ৬ ও ৫ যথাক্রমে। প্রয়োজনে নিজের খাতায় ছকটি এঁকে পূরণ করো।)

কাজ: ১

২) সূচকের ভাগের ধারণা ব্যবহার করে খাতায় ছক ৩.১ এবং ছক ৪.৪ এর অনুরূপ ছক অঙ্কন করো এবং সেটি সম্পূর্ণ করো

৩) আকাশ দুটি সূচকীয় আকারের সংখ্যা ভাগ করতে গিয়ে আর ভাগ করতে পারছে না। সেই সংখ্যা দুটি হল ১৮০ এবং ৬২। সে সংখ্যা দুটিকে ছকের মত করে দুইবার ভাগ করে ভাগফল নির্ণয় করলো। দেখো তো সে ঠিক লিখেছে কীনা?

যদি আকাশের করা দুটি ভাগ প্রক্রিয়ার কোনটি ঠিক হয় তবে সেই নিয়মে তুমি ৬ এবং ৪ এর ভাগফল নির্ণয় করো। যদি আকাশের করা ভাগ প্রক্রিয়া ভুল হয়, তবে তুমি আকাশের ভুলটি চিহ্নিত করে সঠিক ভাগফল নির্ণয় করো এবং পরবর্তীতে সঠিকভাবে ৬ এবং ৪ এর গুণফল নির্ণয় করো।

সূচকের সূচক

আমরা আবার বিদ্যালয় থেকে ৫ দিন ধরে নিজেদের রোলের শেষ অঙ্কের সমান ক্যান্ডি দেয়ার কথাটি ভাবি। ধরো তোমাদের বিদ্যালয়ে এবার সিদ্ধান্ত নেয়া নেয়া হল যে আগেরবারের মত কেউ একদমই পাচ্ছে না এমন হবে না। সেটি ভুল হয়ে গিয়েছিল। তাই আবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগেরবারের মত সকলকে ৫ দিন ধরে ক্যান্ডি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল, কিন্তু নতুন নিয়মে।

এবারও তাহলে তোমরা তোমাদের রোল নম্বর চিন্তা করো এবং রোলের শেষ অঙ্কটি নাও। তবে এবার এখানে নতুন নিয়ম হয়েছে। যেহেতু আগেরবার যাদের রোলের শেষ অঙ্ক ০ অথবা ১ ছিল তারা একদমই কোন ক্যান্ডি পায় নি বা খুব কম ক্যান্ডি পেয়েছে, তাই এবার সেই সকল শিক্ষার্থীদের রোলের শেষ অঙ্ক না ধরে তার জায়গায় ১১ ধরা হবে। অর্থাৎ, যাদের রোলের শেষ অঙ্ক ০ কিংবা ১, তারা নিজদের রোলের শেষ অঙ্কের জায়গায় ১১ ধরবে।

পূর্বের থেকে আরেকটি নিয়মে পরিবর্তন এসেছে। আগের নিয়মে প্রথম দিন রোলের শেষ অঙ্ক যা, একজন শিক্ষার্থীকে সেই সংখ্যক ক্যান্ডি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এবার প্রথমদিন সকলেই ১ টি করে ক্যান্ডি পাবে। বাকি নিয়মগুলো আগের মতই রয়েছে। অর্থাৎ, দ্বিতীয় দিন একজন শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত ক্যান্ডি সংখ্যা হবে, আগের দিনে পাওয়া ক্যান্ডির সংখ্যার সাথে তার রোলের শেষ অঙ্ক গুণ করা হলে, গুণফল যা হবে সেই সংখ্যক। এভাবে বাকি তিনদিন সকলে ক্যান্ডি পাবে।

ছক ৫.১

(ছকে অবশ্যই গুণফলের সূচক আকারে প্রকাশ করতে হবে। কোন ক্ষেত্রেই তোমাদের গুণফলটিকে প্রকাশ করতে হবে না)

উপরের ছকটি পূরণ করা হলে আবার নিচের ছকটি পূরণ করো। তবে এক্ষেত্রে তোমাদের একটি দল হিসেবে কাজ করতে হবে। যে সকল শিক্ষার্থীর রোলের শেষ অঙ্ক মিলে যায়, তাদের নিয়ে একটি দল গঠন হবে। দল গঠন হলে তোমাদের নিজেদের কাছে থাকা ক্যান্ডির গুণের কাজ করতে হবে। গুণটি কি রকম হবে? গুণটি হবে তোমাদের কাছে থাকা প্রতিদিনের ক্যান্ডির গুণফলের সমান। যেমন ধরো, তোমাদের প্রত্যেকের কাছে ২য় দিন কতটি ক্যান্ডি ছিল সেটি গুণ করতে হবে। তাহলে এরপরে ৩য় দিন নিজেদের দলের প্রত্যেকের কাছে কতগুলো ক্যান্ডি ছিল তা গুণ করতে হবে। এভাবে নিচের ছকটি পূরণ করো। এখানে ছক পূরণের আগে একটি বিষয় ভাবো। ধরো, কোন দল ১০ টি করে ক্যান্ডি পায়। এবং সেই দলে ৫ জন আছে। তাহলে দ্বিতীয় দিন সেই দলের প্রত্যেকে ক্যান্ডি পাবে, ১০ টি করে। এবং ৩য় দিন পাবে ১০২ টি করে। এভাবে ছকটি পূরণ করো

ছক ৫.২

উপরের ছকটি পূরণ করা হলে নিচের ছকটি দেখো এবং ভাবো তো আসলে কি ঘটনা ঘটছে। এখানে আমরা ধরে নিচ্ছি ১০ এর হারে পাওয়া যায় এবং ধরে নিচ্ছি দলে মোট ৫ জন আছে।

ছক ৫.৩ (একটি ঘর পূরণ করা আছে। তোমার আগের ছক ৫.১ এর সাহায্যে বাকি ঘরগুলো পূরণ করো। ফাঁকা ঘরগুলো কিংবা আংশিক পূর্ণ ঘরগুলো অনুরূপভাবে সম্পূর্ণ করো)

উপরের ছকটি পূরণ করা হলে একটি বিষয় ভাবো তো।

আমরা শিখে এসেছি, কোন একই সংখ্যা যদি একাধিকবার গুণাকারে থাকে তাহলে, সেই গুণাকার কাঠামোতে সেই সংখ্যাটি যতবার আছে সেটিকে ওই সংখ্যার সূচক হিসেবে বসিয়ে সূচকীয় আকারে লিখতে পারি। চিন্তা করো, আমরা উপরের ছক ৫.৩ এর ২য় সারিতে কি পাচ্ছি? ৫ টি ১০ গুণাকারে আছে। তাই সূচকের ধারণা ব্যবহার করে আমরা পাচ্ছি, ১০০। এখন, ৩য় সারিতে আমরা কি পাচ্ছি? ৫ টি ১০২ গুণাকারে আছে। তাহলে চিন্তা করো, ঠিক আগের সারিতে ১০২ এর জায়গায় আমরা যখন শুধু ১০ ব্যবহার করেছি তখন কি হয়েছে? ৫ টি ১০ এর গুণফল, তাই ১০০। তাহলে আমরা সূচকের ধারণা থেকে কিন্তু বলতেই পারি ৫ টি ১০২ গুণাকারে থাকলে লিখতে পারব (১০২) ৪। এখন তাহলে সূচকের সেই ধারণা ব্যবহার করে আমরা নিচের ছকটি পূরণ করতে পারি কীনা ভাবো তো।

ছক ৫.৪

এবার তাহলে নিচের ছক দুটিকে পুনরায় তুমি এতক্ষণ যা শিখেছো সেই অনুযায়ী পূরণ করে ফেলো।

ছক ৫.৫

আংশিক পূরণ করা রয়েছে। ফাঁকা ঘরগুলো কিংবা আংশিক পূর্ণ ঘরগুলো অনুরূপভাবে সম্পূর্ণ করো)

ছক ৫.৬

এখন একটি বিষয় লক্ষ্য করো, আমরা এভাবে যে সূচককে সূচকীয় আকারে প্রকাশ করছি সেটিকে কিন্তু চাইলে শুধুমাত্র সূচকীয় আকারে প্রকাশ করা সম্ভব। ছক ৫.২ ও ছক ৫.৫ এর গুণাকার এবং সর্বশেষ কলাম দুটি মিলিয়ে যে ছকটি পাওয়া যায় সেটি নিচে দেয়া আছে। ছকটি আংশিক পূরণ করে দেয়া আছে।

ছক ৫.৭

(ছক ৫.২ ও ছক ৫.৫ হতে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে আংশিক পূরণ করা রয়েছে। তোমার প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে বাকি গুলো পূরণ করো)

অনুরূপভাবে দেখো তো ৫.৩ ও ৫.৬ এ তোমাদের প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে নিচের ছকটি পূরণ করতে পারো কীনা?

ছক ৫.৮

(ছক ৫.৩ ও ছক ৫.৬ হতে তোমার প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে পূরণ করো)

কাজ:

১) নিচের সূচকগুলো নির্ণয় করো

২) নিচের সূচকের সংক্ষিপ্ত আকার গুলো নির্ণয় করো

একক কাজ

চিত্রের কার্ডের মত জিনিসটি হল ক্রেডিট কার্ড। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সাধারণত জিনিসপত্র ক্রয় বা মূল্য পরিশোধ করা যায়। মোবাইল ব্যাংকিং এর মত ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা লেনদেনের একটি মাধ্যম হলো ক্রেডিট কার্ড। তবে যে কেউ এই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কোন কিছু কিনতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তা হল পিন। পিন হল শুধুমাত্র নম্বরের সমন্বয়। এতে শুধু অঙ্ক ছাড়া কোন রকম অক্ষর বা প্রতীক থাকতে পারে না। এই পিন প্রদান না করতে পারলে কেউ সেই  ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। অর্থাৎ, ক্রেডিট কার্ডের মালিক যদি পিন ভুলে যান, তাহলে তিনিও সেটি ব্যবহার করতে পারবেন না।

এমনিভাবে ছবির বাবা তাঁর ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের পিন ভুলে গেছেন। তিনি কোনভাবেই সেটি মনে করতে পারছেন না। আবার তাঁর পিন মনে করাটা খুব জরুরি কারণ তিনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করবেন। তখন ছবির মনে পড়লো নিচের চিত্রের সাহায্যে পিনটি খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তোমরা কি ছবিকে সাহায্য করতে পারবে?

আরও একটু সূচক

তোমরা জানো, সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌছাতে গড়ে ৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু তোমরা কি জানো পৃথিবী থেকে সূর্যের দুরত্ব কতটুকু? সুবিধার জন্য ধরে নেয়া হয় সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব ১৫০০০০০০০ কিলোমিটার।

কাজ: পৃথিবী থেকে সূর্যের দুরত্ব কথায় কত হবে চিন্তা করে বলো তো।

আবার, তোমরা কি জানো আলোর গতিবেগ কতো? গাণিতিক সুবিধার্থে ধারণা করা হয় আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩০, ০০, ০০, ০০০ মিটার।

কাজ: আলোর বেগ কথায় কত হবে চিন্তা করে বলো তো।

একটু চিন্তা করো, আমরা তো সূচকের সাহায্যে অনেক বড় গুণাকারকে সহজে এবং ছোট আকারে প্রকাশ করে ফেলতে পারি। এখন একটু ভেবে দেখো তো, সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব কিংবা আলোর গতিবেগের মত বড় সংখ্যাকে ছোট আকারে প্রকাশের জন্য আমরা সূচকের কোন সাহায্য নিতে পারি কী না?

আলোর গতিবেগের জন্য প্রদত্ত ছকটি দেখো। এখানে তোমাদের জন্যে কয়েকটি ঘর পূরণ করে দেয়া আছে। তুমি সেগুলোর সাহায্যে বাকিগুলো পূরণ করো এবং সেটির সাহায্যে চিন্তা করো তো ঠিক কি হয়। তবে ছক পূরণ করার সময় অবশ্যই একটি বিষয় মাথায় রাখবে, নিচের দ্বিতীয় কলামে কিন্তু কখনও ভাগ করতে করতে ১ এর চেয়ে ছোট সূচকহীন কোন সংখ্যা আসবে না।

ছক ৭.১

এভাবেই সূচকের সাহায্যে যে শুধু কষ্ট কমানো যায় ব্যাপারটা এমন নয়। বরং অনেক বড় সংখ্যাকে ছোট আকারে প্রকাশ করা যায়।

তাহলে চলো এবার আমরা সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্বকে ছোট আকারে প্রকাশের জন্য ছক ৭.২ দেখি। এখানেও তোমাদের সুবিধার জন্য কয়েকটি ঘর পূরণ করে দেয়া আছে।

ছক ৭.২

এখানে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে যে ছকের শেষ সারিতে ১৫ এর সাথে ১০ সূচক আকারে রয়েছে। এখন পূর্বের ছকটির কথা চিন্তা করে দেখো তো, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত ভাগ করে ১০ এর চেয়ে ছোট, কিন্তু ১ এর চেয়ে বড় কোন সংখ্যা না পেয়েছি, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি চালিয়ে গিয়েছি। এক্ষেত্রেও চাইলে আমরা সেটি করতে পারি। সেটি নিচের বাক্সে সম্পন্ন করো।

তাহলে কি দেখতে পেলে? সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্বকে ছোট আকারে প্রকাশ করলে কি পাওয়া যায়? আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত প্রায় সবক্ষেত্রেই ১০ এর সূচকের ব্যাপারটি দেখেছি। এখন আমরা সেগুলো নিয়ে একটু চিন্তা করব। আমরা সরাসরি সংখ্যা দিয়ে একটি উদাহরণ দেখার চেষ্টা করি। ১ হাজার। এর গাণিতিক রূপ হল ১০০০।

এবার দেখো, আমরা ১০০০ = ১ × ১০ পেয়েছি। একটু ভাবো তো কোন সংখ্যার সাথে ১ গুণাকারে থাকলে সেটির কি কোন পরিবর্তন হয়? হয় না তো। সেক্ষেত্রে আমরা লিখতে পারব ১০০০ = ১ × ১০

দেখো, সূচকবিহীন সংখ্যা ১ হলে আমরা সেটিকে উহ্য রাখতে পারি।

তাহলে দেখেছো, বাস্তবের বিভিন্ন বড় সংখ্যাকে এভাবে ছোট আকারে প্রকাশ করা যায়। প্রকাশের উপায় নিয়ে, উপরের দুটি উদাহরণ থেকে তোমার অনুধাবন নিচের প্রশ্নের উত্তরের সাহায্যে প্রকাশ করো।

* ভাগের কাজটি কখন শেষ করব?

* ভাগ করে সূচক বিহীন যে সংখ্যাটি পাবো, তা কি ১ এর চেয়ে ছোট হতে পারবে? কিংবা ১ এর সমান হতে পারবে?

* ভাগ করে সূচক বিহীন যে সংখ্যাটি পাবো, তা কি ১০ এর সমান কিংবা বড় হতে পারবে?

কাজ: পৃথিবী থেকে চাঁদের দুরত্ব প্রায় ৩, ৮৪, ০০০ কিলোমিটার। এই দুরত্বকে গাণিতিক ভাষায় ছোট আকারে প্রকাশ করো।

একক কাজ

১) তোমরা নিশ্চয় কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কে অবগত আছো। মারাত্মক ছোঁয়াচে এই মহামারীর কারণে পুরো পৃথিবী একটা বড় সময় স্থবির হয়ে ছিল। আমরা সেই মহামারী নিয়ে একটি একটি গণনা করার চেষ্টা করব। ধরো, একটি বাড়িতে ৩ জন লোক আছে। তারা প্রত্যেকেই কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। এখন হিসাব করে দেখা গেল, তাঁরা ৩ জন প্রত্যেকেই ১ দিনে আলাদা-আলাদাভাবে ন্যূনতম ৩ জনকে আক্রান্ত করতে সক্ষম। আবার তাঁদের দ্বারা আক্রান্ত প্রত্যেকে আবার এক দিনে আলাদা-আলাদাভাবে ন্যূনতম ৩ জন করে ব্যাক্তিকে আক্রান্ত করতে সক্ষম।

সূচকের ধারণার সাপেক্ষে বলো তো কোনরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে, পরবর্তী ৫ দিনে সর্বনিম্ন কতজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যাক্তি থাকতে পারবে? ছক অনুযায়ী পূরণ করার চেষ্টা করো। সাহায্যের জন্য চাইলে গাছ-চিত্রটি দেখতে পারো।

এই ধারায় ১১ তম ও ১৪ তম দিন শেষে সর্বনিম্ন কতজন আক্রান্ত রোগী থাকা সম্ভব?

২) খালি ঘরগুলো সঠিকভাবে পূরণ করো

৩) ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ, ১ কোটি এবং ১০ কোটি সংখ্যাগুলোকে গাণিতিক ভাষায় ছোট আকারে প্রকাশ করো। দেখো তো মূল সংখ্যায় ১ এর ডানে মোট কতটি শূণ্য রয়েছে। এবার সংখ্যাটিকে ছোট আকারে প্রকাশের পর, যে সূচকীয় সংখ্যাটি পাও, তার সাথে পূর্বের প্রাপ্ত শুণ্যের সংখ্যার মাঝে কোন সম্পর্ক পাওয়া যায় কী?

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion

Promotion